ইবনে আরাবীর বাণী

ইবনে আরাবীর বাণী

১. মানুষ পানিতে ভিজলে কাপড় বদলায়, ঘামে ভিজলে ভাগ্য বদলায়, আর রক্তে ভিজলে ইতিহাস বদলায়।

২. কোন পাপই আল্লাহর রহমত থেকে বড় নয়।

৩. আমরা মানুষ শূন্য থেকে এসেছি, আবারো শূন্যেই ফিরে যাবো।

৪. আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের পরীক্ষা নেন, পরীক্ষার সময় সবুর করতে হয়। সবুর কোন সহজ কাজ নয়, যে গাছ ঝড়ের সাথে তাল মিলাতে পারে না তা ভেঙে পড়ে যায়!

৫. যে অশ্রু কাঁদায়, তা হৃদয়ের পুঁজ দূর করবে।

৬. তোমার দৃষ্টি তোমার আয়না। মনে রাখো তুমি অন্যদের যেভাবে দেখবে অন্যরাও তোমাকে ঠিক সেভাবেই দেখবে!

৭. ব্যথা সবসময়ই ক্ষণস্থায়ী হয়। আঘাত ব্যথা না পেলে বিজয়ের আনন্দ কখনও উপভোগ করা যায় না!

৮. প্রজ্ঞাই মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ।

৯. যতক্ষণ তোমার ভেতর ঈমাণ থাকবে ততক্ষণ তোমার শত্রুও থাকবে!

১০. কারো গন্তব্য কোথায় হবে তা তার প্রচেষ্টার আলোকেই নির্ধারিত হয়।

১১. যে কথা গোপন রাখতে পারে না, তার কাছে কখনো গোপন কথা বলো না।

১২. কখোনো ভেঙে পড়ো না, হতাশ হয়ো না, ছোট ছোট পরাজয় বৃহৎ জয়েরই হাতছানি। তোমার প্রতিটি পরাজয়ই নতুন কিছু জয়ের আহ্বান।

১৩. সাধারণ বান্দা থেকে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হবার জন্য সব থেকে বড় ভূমিকা শয়তানের।

১৪. চোখ দিয়ে যে অশ্রু গড়ায়, তা হৃদয়ের বাগানে প্রবাহিত হয়ে ফুলে-ফলে সাজিয়ে তোলে।

১৫. নিজের উপর পূর্ণ আস্থা রাখো আর আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হয়ে এগিয়ে চলো।

ইবনে আরাবীর বাণী

১৬. ধনুক যতো জোরে টানবে, তীর ততো দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হবে।

১৭. এখন তোমরাও সেরকমই পুনরুত্থানের দিন গণনা করছো, বীজ যেমন মাটি থেকে অঙ্কুরিত হওয়ার দিন গণনা করে।

১৮. ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বুঝতে হলে তোমাকে প্রথমেই আমাদের নবীজী (সা.) সম্পর্কে জানতে হবে।

১৯. কোন কিছু পাওয়ার জন্য জোর জবস্তি করো না, তুমি ঠিক ততোটুকুই পাবে, যতোটুকু আল্লাহ তোমার জন্য বরাদ্ধ করে রেখেছেন।

২০. যদি তুমি অন্যের কষ্ট অনুভব করতে চাও, তবে তোমার নিজে আগে সেই কষ্ট অনুভব করতে হবে।

২১. পৃথিবী আসলে একটি শিক্ষালয়, যেখানে আমাদের সবাইকে আলাদাভাবে পরীক্ষা করা হয়। এবং আমাদের একমাত্র শিক্ষক হল আমাদের আল্লাহ।

২২. শাহাদাত হলো আমাদের নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ঠ উপায়, কোনো মুমিন ব্যক্তি জুলুমের বিরুদ্ধে যতক্ষণ যুদ্ধ করে যাবে- ততক্ষণ সে একজন শ্রেষ্ঠ মুসলিম।

২৩. সত্যের পথে যখন কেউ পথিক হয়ে যায়, মহান আল্লাহ স্বয়ং তাঁর সাহায্যকারী হয়ে যায়।

২৪. তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো, যাদের ধার্মিকতা তোমার চাইতে বেশী। এবং দুনিয়াদারী তোমার চাইতে কম।

২৫. কোনো পুরুষ যদি কোনো নারীকে সম্মান করে, তাহলে বুঝতে হবে সেই পুরুষ নিশ্চয়ই কোনো সম্মানীতা নারীর পুত্র।

২৬. যে বীজ খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে আগ্রহী নয়, সে কখনোই ফলদায়ী বৃক্ষ হতে পারে না।

২৭. যে শুধু নিজের জন্য শান্তি  খুঁজে; তার কাছে শান্তি থাকে না। শান্তি তার জন্য, যে অপরের কল্যাণে নিয়োজিত।

২৮. মুসলমানদের উচিৎ তাদের নিজেদের গৌরবময় ইতিহাস সর্ম্পকে জানা, যাতে তারা দুর্ভাগ্যের অবসান ঘটাতে পারে।

২৯. শত্রুকে পরাজিত করাতে পারাই প্রকৃত জয় না, শত্রুর মনকে পরাজিত করে আল্লাহর দিকে আনাই প্রকৃত জয়!

৩০. লোকজন যদি তোমাতে মুগ্ধ হয়, তাহলে ভেবো না তুমি মুগ্ধকর। আসলে আল্লাহ তোমার পাপগুলোকে ঢেকে রেখেছেন। লোকে তোমার ওপর ঝুলানো আল্লাহর পর্দাতে মুগ্ধ। এটা আসলে তুমি না, আল্লাহর দান করা আবরণ। তোমাকে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে যাতে তুমি আরও ভালো কাজ করতে পারো এবং এইসব ধ্বংসাত্মক প্রশংসায় আত্মমুগ্ধ হয়ে না পড়ো।

ইবনে আরাবী (Ibn Arabi) জন্ম- ২৮ জুলাই, ১১৬৫; মৃত্যু- ১০ নভেম্বর, ১২৪০। তিনি ছিলেন একজন আরব সুফি সাধক লেখক ও দার্শনিক। সুফিতত্ত্বে তার অনবদ্য অবদানের কারণে তিনি শেখ আল আকবর মুহিউদ্দিন ইবনুল আরাবী নামেই সমধিক পরিচিত। আন্দালুসিয়া বা বর্তমান স্পেনের মূর্সিয়া নগরীতে জন্ম গ্রহণ করায় তাকে আন্দালুসি ও আল-মূর্সি বলা হয়। তাছাড়া তিনি দামেস্কে মৃত্যু বরণ করায় ডাকা হয় দামেস্কি। অন্যদিকে ইমেনের প্রসিদ্ধ দাতা হাতেমতাই তার পূর্বপুরুষ হওয়ায় আল-হাতেমী এবং আল-তাই উপনামেও তার প্রসিদ্ধি রয়েছে। তাঁর রচিত প্রায় ৩৫০টিরও অধিক গ্রন্থ বিশ্বজুড়ে সামদৃত।

error: Content is protected !!