একগুচ্ছ কবিতা- জেবুননেসা হেলেন
অদ্ভুত অনুভূতি
আতপ চাল সেদ্ধ হচ্ছে,
দিয়েছি নুন তেল সামান্য পেঁয়াজ,
একআধটু আদার কুঁচি রসুন কুঁচি।
ঘ্রাণেই তোমার গাল থেকে
ঠোঁটে খসে পড়লো
প্রশংসার উচ্ছ্বাসনীতি।
আমি পলান্ন রেখে
শাড়ির কুঁচি গোছাতে ব্যস্ত,
চোখে ভ্রুকুটি।
হায়! হায়! শব্দ
পেছন থেকে ঝাপটে ধরলো টুঁটি।
রঙচটা রঙ—-
ভুল শব্দ কত
পথই মাড়িয়ে যায় সবে,
কবে হাটে কার গায়ে কার
ধাক্কা লেগে মন ভেঙেছে,
সে কথা কি আর মনে রাখার ব্যাপার!
কাচের টুকরো ভাঙতে পারে,
ভাঙে না মন খসা রঙ।
সময়ের সঙ্গে ক্ষয়ে যেতে থাকে
ঝাপসা স্মৃতি,
অবসরে পেছনে ফিরলেই ভেসে ওঠে
কিছু স্মৃতির নির্যাস।
হাতে এসে পরে
সেই হাটের ধাক্কার মূহুর্তটি।
বৃত্তের বাইরে
অহংকারের পরিধি
পিন ফুটো করে
কেন্দ্রপ্রীতি সঙ্গে করে
আমি হতে চাই
ব্যাসবাক্য ব্যাসার্ধ।
ষাট উর্ধ্ব প্রেম নাকি
চাহিদামাফিক নয়!
আমি ষাট উর্ধ্বেও হতে চাই
মৃন্ময়ী গোলাপ।
সংলাপ শুনে হাসো বা
হার্ট এটাক করো!
আমি তোমাতে সয়লাব।
একবিতাও তোমাকে
স্মরণ করে আত্মবিলাপ…
নাগর দোলা
টুকরো টুকরো হয়ে
আকাশ জলে পড়ছে,
তার প্রতিচ্ছবি খন্ড খন্ড
ঢেউ দিচ্ছে ভেঙে।
আকাশ জলের প্রতিবিম্ব
খেলায় আমি এক বাউল,
নিসর্গ পিয়াসী।
আকাশ জলের দিকে চেয়ে
দিন মাপি…
বাঘবন্দী খেলার ঘর কাটি।
সিলেবাসে তিনভাগ জল
করপোরেট নগরে
হঠাৎ আসা সুনামির জলঝড়
ভাসায় গার্হস্থ – নগর।
নেই বৈশাখীর বজ্র কড়কড়,
বর্ষার বিজুলীর স্থাবর অস্থাবর।
সাগর ফুঁসে ওঠে
ফেনিল ধোঁয়ার জল জ্যোৎস্নায়।
ভাসে ঘাস বিচুলি,
মিনের শব,
তীরের বালি।
সিলেবাসে ভাসে চতুরঙ্গ মনোপলি…
দশার বিদিশা
গ্রীক পুরাণ অথবা মায়া
সভ্যতা থেকে তুমি উঠে
এসেছো আমার না কাচা
উঠোনে।
বাথানের গরুর পাল ফেলে
আমি উঠোন লেপায় ব্যস্ত হয়ে দেখি,
মেকি কথার ভিড়ে তুমি হাবুডুবু খাচ্ছো।
খূঁজে খুঁজে আমি যখন পাতার ক্ষয়ে যাওয়া
শরীর থেকে মথ হিসাবে তোমাকে কুড়িয়ে
এনে প্রজাপতি ডানা অথবা ফড়িং য়ের পাখা দিয়েছিলাম,
তুমি উড়তে শিখেছিলে।
আমি সৃষ্টি আনন্দে পিরামিড দেহ তল্লাসিতে
পেয়েছি আমাদের আদি- অভ্যাস!
তুমি শুধু খুঁজে যাও মায়াসভ্যতার জিহবা,
কর্ণ ও আঙ্গিক রক্তপাতের উৎসর্গে বিঃসর্গ।
কিকরে বুঝাবো,
আমি তুমি ও আমাদের যা কিছু
তাহাই স্বর্গ।
শুভম
বীজ থেকে চারাগাছ
যখনই ওঠে।
ভ্রুণ দেখে তুমি ভাবো,
আমি বাপ।
সাব্বাস!
পরাগায়ন কালে
যেফুলে মালা দিলে।
তার গর্ভে বীজ হলে,
তাকে কেনো কথার
ফাঁকে ফেলে দিলে?
মিষ্টি নুন যে রাসায়নিক
বন্ধনই বাঁধো,
ফুল ফল বীজ
দু’ জনার মুদ্রা।
ATP যেমন জৈব মুদ্রা।
আরও পড়ুন- সুশান্ত হালদারের কবিতা