প্রচ্ছদসাহিত্য

একগুচ্ছ কবিতা- রথীন পার্থ মণ্ডল

 শুনতে পেতাম তোমার ডাক

চিঠি আছে, চিঠি!
চিঠি আছে, চিঠি!
ডাকের অপেক্ষায় থেকে যাই আজও
শুনতে পেতাম দরজায় কড়া নাড়া–
চিঠি আছে, চিঠি!
জন্ম থেকে জন্মান্তরে
তোমার সাথে পথ চলা
মন থেকে মনান্তরে
জীবন থেকে জীবনের
পথ বেয়ে কত খবর
বয়ে আনা তোমার
রাতের বেলায় ঘুমিয়ে পড়ে
শুনতে পেতাম তোমার ডাক–
চিঠি আছে, চিঠি!
ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হয়ে চলে গেছে রানার
আছে শুধু পোস্টম্যান আর
ইমেল হোয়াটসঅ্যাপের টুং টুং করে
দরজায় কড়া নাড়া–
চিঠি আছে, চিঠি!

মনে পড়ে

পথ চলতে চলতে বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছি

মাঝে মাঝে ভালো লাগে না পথ চলতেও
তবুও চলতে খুব ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে সামনের দিকে এগোতে
ইচ্ছে করে পিছোতেও
তোমার সাথে হাতে হাত রেখে পথ চলতে
মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে
কিছু কিছু সময় হারিয়ে ফেলি পথও
আসলে ফেলে আসা কালের পথে
আজও খুঁজে পাই নিজেকে
খুঁজে পাই তোমাকে
এই পথের কাছে রোজই কত কিছুই না শিখি
তবুও কেন জানি না মাঝে মাঝে বড্ড
অচেনা লাগে এই পথকে
একলা চলার পথে
পথের সাথে কথা বলতে বলতে
কানে কানে বলে যায়–
কাঁকড় বিছানো পথে হাঁটার অভ্যাস রাখো।।

মাঝদরিয়া 

রাত্রির বুক চিরে নেমে আসে মেঘ
তোমার ভালোবাসা মাখা হাতের স্পর্শে
একদিন ভেঙেছিল ঘুম।
ঘুম ঘুম চোখে দেখেছিলাম
তারাদের আনাগোনা,
তুমি তো ছিলে আমারই পাশে
হাতে হাত রেখে…
দমকা হাওয়ায় নিভে গেল সব
অন্ধকারে তোমার হাত হাতড়াতে হাতড়াতে
মাঝদরিয়ায় ভেসে চলি
কিনারার খোঁজে।

 তুমি তো আছ

৪৬৩ নং বি সি রোড মেঘনায় এলেই
আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হও তুমি
হাত ধরে চলা, ফিরে পাই ছোটোবেলা
বিজয়তোরণ থেকে রাজবাড়ি
যতবারই হাঁটি সময়ের স্রোত বেয়ে
সাথে থাকো তুমি ও তোমার উদারতা
দূর থেকে দূর ঐ মহাশূন্যের
ওপার থেকে ভেসে আসে তোমার হাত
মাথায় নিয়ে মনে পড়ায় আমার বাবাকে
নিজের মধ্যে নিজেকে হারাতে হারাতে
শুনতে পাই– ব্যর্থ হয়েছো তো কি হয়েছে,
তোমার পাশে তো মইনুলদা আছে ।।

একা

এখন শুধু একলা মনে ঘুরে বেড়াই
তোমার কথা ভাবতে ভাবতে,
সে কোন পড়ন্ত বিকেলে আলাদা
হয়েছিল আমাদের জীবনপথ।
নদীর তীর, ব্যাকুল করা বসন্ত বিকেল
এসব ফেলে
তোমার কথা ভাবতে ভাবতে এখনও
একা হেঁটে চলি।
error: Content is protected !!