একগুচ্ছ গীতিকবিতা- জহুর কবির
সে কি তুমি?
আমার অবুঝ মন মন্দিরে
গড়েছি যে মূর্তি ; সেকি তুমি?
ভাবনা সায়রে উথাল পাথাল
যে ঊর্মি ফূর্তি; সেকি তুমি?
প্রাচীন প্রেমের টানে ভেসে আাসা
শুভ যাত্রায় সারথি আমার
প্রনয় বেদিতে সকল পূজার
পরিমল যতো আরতি আমার
সবিতো তোমার জন্য রেখেছি
আমি সঞ্চিত
মূল্য কি আছে আমার, তোমার
প্রেম বঞ্চিত?
দূর পাহাড়ের চূড়ায় তোমার সত্য নিলয়
ভাঙেনা কখনো আসুক যতই উছল প্রলয়।
সেই পাহাড়ের ঝর্ণার ধারা নদী হয়ে বয়
সাগরের সাথে পরিশেষে হয় মন বিনিময়।
পায় পূর্ণতা তৃষিত নদী
আমি তেমনি হতাম যদি!
নীল জোছনা
বাতাসে ছড়িয়ে দিয়েছি আদর জড়ানো হৃদয়
জানিনা তুমি তা পেয়েছো কি
নীল জোছনার বসন জড়িয়ে অঙ্গে তোমার
খেয়ালের তরী বেয়েছো কি।
তারা জ্বলা রাতে স্মৃতি ঘেরা পথে
বুনো ফুল আজো ফোটে কি
তোমার মিলন তৃষিত দু’চোখে
আবেশের ঢেউ ওঠে কি
স্মৃতির সে নীল দিয়ে কোন ছবি
হৃদয়ে আঁকতে চেয়েছো কি ।
সুখের আভাসে মনের আকাশে
স্বপ্নেরা সাথী হয়ে কি
নতুন কথার কোন গান হয়ে
অন্তরে যায় রয়ে কি
আনমনা সুরে উদাস দুপুরে
সেই গান কভু গেয়েছো কি।
আবির রাঙাণো চৈতালী সাঁঝে
ঝরা শিমুলের শয্যা বিছায় বনবীথি
নয়নে আমার ভাসে বারবার
হারানো বধুর প্রেমের মধুর সেই স্মৃতি।
কিসের আশায় জানিনা সে মিছে
অপবাদ দিয়ে আমার সীমানা গেছে ছেড়ে
ভাবিনি কখনো ছলনার কাছে
পুষ্পের মতো এই ভালোবাসা যাবে হেরে।
সজল বাতাসে মনের আকাশে
আজো বাজে তার শপথের সুরে গাওয়া গীতি।
প্রেমের পরাগ মাখা মধুময়
সেই দিন আর পাবোনা জীবনে বুঝি আমি
মনের আবেগে রাত জেগে জেগে
আঁধারে আলোতে তবু আজো তারে খুঁজি আমি।
বাসনার ফুল ঝরবে যেদিন
সেদিন মিথ্যে স্বপ্ন দেখার হবে ইতি।
তোমাকে পাবার জন্য
তোমাকে পাবার জন্য নীরবে
হাজার আঘাত সয়ে যেতে চাই
এক মোহনায় প্রেম যমুনায়
অনন্ত আমি বয়ে যেতে চাই ।
দিবস রজনী ফুলের গন্ধ
যদি নিয়ে আসে চৈতালী হাওয়া
তবে ভালোবেসে আরো কাছে এসে
মন দিয়ে নিয়ে সবি হবে পাওয়া
রঙিণ স্বপ্নে সাজিয়ে বাসর
দু’জনে আপন হয়ে যেতে চাই।
নিরুপম রূপে নিরুপায় হয়ে
অপলক চেয়ে থাকে দুটি আঁখি
সাঁঝের আকাশে অাবেগের রঙে
তোমার নাম যতনে লিখে রাখি
নূপুরের ধ্বনি হয়ে দুটি পায়ে
জনম জনম রয়ে যেতে চাই।
সাত রঙে রাঙা মন
বাসনার সাত রঙে রাঙা মন
অনুক্ষণ তারে কাছে পেলো
বহু সাধনায় জীবনে আমার
প্রেম ফাগুনের দিন এলো।
বিষণ্ণতার নীল অঞ্জন
দুটি চোখে মেখে
ঘুম হীন কতো রাত হলো শেষ
তার ছবি এঁকে
বরষার শেষে মনের আকাশে
একমুঠো রোদ হেসে গেলো।
বিরহী এ বুক সুখে ভরে গেলো
তারে কাছে পেয়ে
হৃদয় ভোমরা প্রনয়ের সুরে
গেলো গান গেয়ে
নিবিড় কাজল এলো কুন্তল
উদাস অনিলে দোল খেলো।
শিশিরের কণা হয়ে আছি ঘাসবনে
তুমি ভেজাবে চরণ বলে
আমি শিশিরের কণা হয়ে আছি ঘাসবনে
তুমি আসতে পারো ইচ্ছে হলে
শিশিরের স্নান শেষে ভোরের আলোর মতো
তুমি হাসতে পারো ইচ্ছে হলে
উষ্ণ আদরে বুকে ধরে
রাখতে পারো তোমার ইচ্ছে হলে
মিলন মধুর সুরে কাছে
ডাকতে পারো তোমার ইচ্ছে হলে
একটু আমায় ভালোবাসতে পারো ইচ্ছে হলে।
প্রনয় বাঁধনে সযতনে
বাঁধতে পারো তোমার ইচ্ছে হলে
বাসনার মালা দুটি হাতে
গাঁথতে পারো তোমার ইচ্ছে হলে
প্রেমের জোয়ারে তুমি ভাসতে পারো ইচ্ছে হলে।
আরও পড়ুন- সিরাজুল ফরিদের ছড়া