দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা
ফিরে আসে জীবন টানে
নবজন্ম হয় মাঝে মাঝে।
রোদ্দুর গায়ে মেখে। মে উঠোনে ও খ্যালে, চেয়ে দেখি সেখানে আজ সবুজ স্বর্গ।ফুটিফাটা যাপন উধাও।
একটা ঘোরের মতো সকাল।নিজেই নিজেকে চিনতে পারে না যেন।
ছেঁড়া ছেঁড়া স্বপ্ন দেখি সুন্দর মালা গাঁথা।কে গাঁথলো দেখতে গিয়ে দেখি তুমি দাঁড়িয়ে হাসিমুখ।
আলোরা ফিরে আসতে থাকে নদীর জলের মতো। পাড়ে তার ছলাৎছল। রোদ্দুরের মুখের দুষ্টুমিতে জাগতে থাকার ইশারা।
একটা নবজন্ম ঘুরে ফিরে আসে মাঝে মাঝে।
দিনপথ
একএকটা দিন অন্যরকম
প্রাণখোলা হাসি শুষে নেয় যেন।
একটা সূর্য বুকের ওপর বসে থাকে
পোড়াতে থাকে কাঁচা মাংস।
নদী শুকিয়ে নুড়ি পাথর গড়াগড়ি খায়
বালির গায়ে যেন ইতিহাস এঁকেবেঁকে চলে।
একএকটা দিন অন্যরকম
বিশ্বাস পুড়তে থাকে বাঁকা চাহনিতে।
বন্ধুতার ভরসা যেন দূরতম দ্বীপ
ভালোবাসার গায়ে লেগে কালো চাদর।
খাঁচার পোষা ময়না কথা কয়না সারাদিন
শুধু কলতলায় সশব্দে হাঁড়ি মাজার আওয়াজ।
বুকের চেনা পথে লোক থাকে না সেদিন
একা একা হাতড়াতে থাকি স্মৃতির বিশ্বাসী মুক্তোগুলো।
যাপনের রোদ
ফেরাতে সবসময়ই কষ্টের শিশির লেগে থাকে
মনযেতে নাহি চায়
তবুও সময় সাজিয়ে নেয় সব
শিশিরের উবে যাবার মতো
প্রাত্যহিকীর জীবন জাগানো রোদ লাগলেই
যেতে যেতে এভাবেই ভাঁড়ার পূর্ণ করা
বিসমিল্লার সানাই বা জগজিতের গজলে
পথজাগে তার লালমাটির আবেশে
সবুজ মেখে গড়াগড়ি দেয় যাপনের বিন্দুগুলো
দোয়েলের গানে রোদ এক্কা দোক্কা খেলে উঠোন জুড়ে
সোনাঝুরির সবুজে থাকে আমার দ্রুতি
কাছে গেলেই বুকে টেনে নেয় নিজের অনুভবে
জড়িয়ে ধরে নূপুরের সুর তোলে বুকে
ফিরতে চাইলেই থেমে আসে পা
ফিরতে না চাওয়ার উৎপদ্যমান আহেরিয়া তখন
আলোকিত হবার গল্পটা
ছোট ছোট স্মৃতিগুলো জুড়লেই
আমার রোদ্দুর হয়ে ওঠার গল্পটা।
গাছেদের বন্ধুতা ।
দারিদ্র্যের লেপ্টে থাকা
ছেঁড়া ছেঁড়া স্বপ্ন নিয়ে।
উত্তরণের আগুন চোখ
শতঅবহেলার মাঝেও।
জেগে থাকে শুধু পাখির চোখ।
রোদ্দুর হতে হবে
পোড়াতে হবে নিজেকে—
পোড়াতে হবে চারপাশের দৈন্যতা।
একটা সকাল আসবে নরম রোদ মেখে
আদুল গায়।
তার শরীরের জ্যামিতিতে
জাগবে লাল হিমোগ্লোবিন।
বুকের পাঁজরে বাজবে বিসমিল্লা।
আরহাতে থাকবে তার উদ্যত তলোয়ার।
সাফ হবে সব—
আলোর ঝলকানি তখন চারদিকে
জোছনায় ভাসবে বুকের গহীন আপন বিলাওলে ।
আরও পড়ুন- নকিব মুকশির কবিতা