সুশান্ত হালদারের একগুচ্ছ কবিতা
আগুন শোভিত মৃতদের ফুলশয্যা
মাথা থেকে খুলি উড়ে গেছে
চোখ থেকে কর্নিয়া
হাত থেকে আঙ্গুল
অথচ বাতাসের সাঁইসাঁই শব্দে নিয়ত করেছি
এলোপাতাড়ি ঝড়েই ঘুরে দেখবো কতটা ক্ষুধার্ত লালসা নির্ভর এই পৃথিবী
ঝরাপাতার এই যে বিকেল
হেলেপড়া সূর্যের বিষাদ ভরা গাম্ভীর্য
তাকে যদি সাতচল্লিশের জয়নুল বলে ডাকি
তবে নজরুল আমার কবিতায় জলজ্যান্ত বিদ্রোহী
মাথা থেকে খুলি উড়ে গেছে
তাতে কি?
আমিতো এসেছি আগুন শোভিত মৃতদের ফুলশয্যা থেকে!
দখল
এখানে যারা উপস্থিত সমবেত বন্ধুগণ
কবি নন অথচ কবির খেতাব লাগিয়ে যারা দূর থেকে এসেছেন
সবাই যে রাষ্ট্রের যোনি ভোগ দখলে আছেন
এ কথা জেনেই মুখের থুথু গিলে ফেলেছি বাহাত্তর ঘন্টা আগে
আরো জেনে খুশি হবেন যে
আপনাদের বেফাঁস কথাবার্তায় কাল যে ইরোটিক চ্যানেল উদ্ভোধন করা হয়েছে
তার সিংহভাগ আপনাদের
সহনশীলতার মাঝে যে সঙ্গমীয় এগ্রো বায়োলজিক্যাল জীবানুর অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন
তার জন্য স্বয়ং ঈশ্বরও কৃতজ্ঞ আছেন
শুধু আমি-ই
আপনাদের মতো হ্যাংলা পরশ্রীকাতর চুরিবিদ্যায় পারদর্শীদের
মুখ দর্শনে অনীহায় স্পর্শকাতর ভূমিকায় অবতীর্ণ আজ এই সভামঞ্চে
অথচ দুর্ভাগ্যের নির্মম পরিহাস
পলাশ শিমুলের রক্ত রঞ্জিত হাতে আজ আপনারাই ঈশ্বর বিগলিত কণ্ঠে বলে ওঠেন
ধর্ম আর মানবতার সংমিশ্রণে আমরাই গড়েছি সুখ সমৃদ্ধ ‘বাংলাদেশ’
তখন বুঝতে আর বাকি থাকে না
ছাপান্ন হাজার বর্গমাইল আজ ভূমিদস্যুদের দখলে!
কসম
আকাশে চাঁদ
শূন্যতায় হাতছানি দিয়ে কে যেন ডাকে
দূরে খেঁকশেয়াল,পেঁচার দল চেয়ে চেয়ে দেখে
কুয়াশা ভেদ করা সন্ধ্যায় রাতও ওঁৎ পেতে থাকে
নাগর পুরুষ ভুলে যায় সঙ্গম শিরশির বাতাসে
তবে কি চাঁদডোবা রজনী ভুলে গেছে রোদপোড়া দিনের গলদঘর্ম কামিনী?
মাঝিমাল্লাহীন চেয়ে দেখ স্রোতে নিগুঢ় নদী ঘাট
দূরপাল্লায় ছুটে চলে নক্ষত্র,আলোহীন ওই নীলাকাশ
তবুও কে যেন ডাকে অন্তিমশয্যায়,কাতর মিনতি তার
আমি কি জানি পাতা ঝরা দিন শেষে
মোরগ ডাকা ভোর আসবে না ফিরে এই বাংলায়?
রমনীয় মহিমায় যদি কেউ ডেকে যায়
ভালোবাসার নিগুঢ়তায় যদি কেই কিছু বলে যায়
মৃত্যুর কসম
প্রেম বিগলিত দেহে সবুজের নাম অমরতায় লিখে নিলাম!
আরও পড়ুন- অনুপম রায়ের কবিতা