সেঁজুতি জাহানের কবিতা
চিহ্ন-সুরের রাগ
কষ্টগুলো মুক্তোদানায় গাঁথি
বদ্ধ মনে বেদম মারি লাথি
কায়দা করে এড়িয়ে চলি তাদের
আকাশ ভরা দেমাগ দেখি চাঁদের
মনকে আমি বেজায় বাসি ভালো
ভাদর মাসের মিষ্টি পাকা তালও
হয়ত সেদিন খুব বেশি নয় দূরে
গাইবে মানুষ আমার সুরটি জুড়ে
সবভালো হোক কষ্ট পোড়া মনের
বুঝ হবে ঠিক কষ্ট দেওয়া জনের
আকাশ তুমি বাতাস হয়ে নাচো
আছাড় মেরে মানুষগুলো কাচো
যারা কনকর্ড পেতে বসে থাকো
আমাদের বাংলা ব্যাকরণে সমাস থাকে।
চুপচাপ ছয়টি সমাস ছয়টি রিপুর মতো বসবাস করে।
কখনো এ ওর সাথে ঝগড়া করে,
আবার একসাথে মিলে যায়।
কখনো একজনের জয় হয়,
অপরজন নিজের পরাজয় উপভোগ করে।
মাঝে মাঝে বহুব্রীহি কিছু ঝামেলা বাধায়।
বিভ্রান্ত করে দ্বিগুর কিছু সংখ্যাকে।
তাসত্ত্বেও বহুব্রীহি বহুপদী অর্থনীতি করে।
গোপন আধিপত্যের মীমাংসা
ধরে রেখেই মিলে যায়।
আবার ঘোড়ার ডিমটাকে
নিজের মধ্যে পরম যত্নে ফাটায়।
ভেজে না খেয়ে সুবিধা বুঝে ফট করে
তৎপুরুষের ষষ্ঠ বৌয়ের ঘরে রেখে দিয়ে চলে আসে; সবার অজান্তে,অলক্ষ্যে।
তো,
বাংলাদেশের কালচারাল পলিটিক্স দেখতে চাও?
নীলক্ষেতের ফুটপাত থেকে একটা পুরনো হায়াত মামুদের ‘ভাষা শিক্ষা’ কিনে নিয়ে সমাসের পর্দা ওঠাও।
কনকর্ড পর্যন্ত আর যাওয়া লাগবে না।
ঘেন্না
এইসব বৃষ্টির দিনে আমার অনেক ঘেন্না লাগে
কাদা প্যাচপ্যাচে রাস্তায় পা দিয়ে হাঁটতে গেলেই সর্দি হয়
জনস্মমুখে নাক ঝাড়তে ইচ্ছে হয়
কারো কারো প্লাস্টিক-মুখে নাক ঝেড়ে দিতে ইচ্ছে হয়
কখনো কখনো মনে হয়,
একবার সত্যিই ঝেড়ে দিয়ে আসি, প্লাস্টিক তো!
পরে কী মনে করে উলটো দিকের কাদায় পা ফেলি
পাগলে যায় সন্ন্যাসী ভবিষতে
অজানা বেড়াল ম্যাঁও ডেকে ওঠে
কাঠবাদাম গাছের ছাতা তোলা থাকে,তবু লাভ হয় না
বৃষ্টির সর্দি অবলীলায় হাসে
বৃষ্টি পড়ে একটি দামড়া আসমান থেকে
কিন্তু এখানে টাপুরটুপুর বোল নাই
নদেও বান আসে না
নদীও বিধবা
খাল বিলগুলোরও সর্দি লেগেছে
এইসব বৃষ্টির দিনে আমার ভীষণ ঘেন্না লাগে
কাদা প্যাচপ্যাচে রাস্তাগুলো ফসলি মাঠের মাটির মতো উর্বর না হয়েও
মেটে হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন- নকিব মুকশির কবিতা