প্রচ্ছদবিবিধ

হিজাব- শায়লা সিমি নূর

-হিজাব আমিত্ব থেকে মুক্তি পাবার জন্য।

– পারিবারিক বা মুষ্টিমেয় সংঘটনের মান-স্থাপনের চাইতে এর অর্থ বৃহত্তর।

-মাধুর্য প্রকাশের চাইতে, মাধুর্য নিজের ভিতর ধারণ এখানে প্রধান!

-হিজাবের অর্থ আভিজাত্য।

– হিজাব মহিমান্বিত নারী সত্তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের দর্প।

হিজাব বা কাভার বিভিন্ন দেশের, বহুবিধ সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে প্রচলিত। ইসলামে পুরুষ- নারী উভয়ের জন্য কভার নির্দিষ্ট করা রয়েছে। রয়েছে খ্রিস্টান ধর্মের যাজক নারী-পুরুষের মাথা ঢেকে রাখার প্রথা। এ ধরণের প্রথা  রয়েছে শিক ধর্মেও।

কিন্তু ইসলামের ক্ষেত্রে পুরুষরা নারীদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে…

এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এক শ্রেণী, অপর শ্রেণীর উপর চাপ সৃষ্টি করছে হিজাবের জন্য।

কোনো কোনো রাষ্ট্র চাপ সৃষ্টি করছে নারীকে , আবার আমেরিকাতে হিজাবের না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়, এ রকম অনেক ঘটনা রয়েছে।

এ সব বিতর্কিত বিষয় পেছনে ফেলে একটু এগিয়ে যাই :

আমিত্ব থেকে মুক্তি:

হিজাব আমিত্ব থেকে মুক্তি পাবার জন্য কারণ, নিজের উপর নজরদারি করে সমাজে চলতে হয়, এ’অনুভব ছোট থেকে না পাওয়া গেলেও ১৫-১৬ বছর বয়সে অবশ্যই আমরা বুঝে যাই যে; আমরা সকলকে বিচার করি এবং সকলে আমাকে বিচার করে! আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সামাজিক মানুষ পোশাক দিয়ে বিচার করে। এখন এ’ধারা খুব প্রবল, দামি কাপড় ও সাজসজ্জা থেকেই সামাজিক অবস্থান বিচার করা হয়।

উদাহরণ: আগেও হয়েছে যেমন শেখ সাদীর (র.)  গল্পের নাম ‘পোশাকের গুণ’, গল্পটি আমরা জানি। আবার পৃথিবীতে আল্লাহর যারা প্রেরিত আত্মা , তাদের সন্মন্ধে একটি ধারণা রয়েছে যে, তারা গরিব ছিলেন! কিছু ঘটনা ও ইতিহাস থেকে একটি চক্র সেন্ট, নবী- রাসূলদের সন্মন্ধে এ’সব প্রচার করে।

সমস্ত আল্লাহর প্রেরিত আত্মারা সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছিলেন। তাদের ধনদৌলত মানবতার পথে ব্যয় করেছেন; তা জ্ঞান বা অর্থ-সম্পদ যেটাই হোক! মা খাদিজা (রাঃ) সম্পদশালী ছিলেন। নবী হযরত (সাঃ) সম্পদশালী পরিবারের ছিলেন। মা ফাতিমার (রাঃ) জীবনী থেকে, একটি ঘটনায় বর্ণিত হয়েছে যে; উনার পোশাকের চমক দেখে শত-শত মহিলা ইসলাম গ্রহণ করে…

এ সব বিচার থেকে নিজেকে ও অন্যকে মুক্তি দিয়ে একটি সভ্য অবস্থানে থাকাতে কভার সাহায্য করতে পারে।

হিজাব কোনোদায়বদ্ধতা নয়, প্রেম থাকতেহয় :

পছন্দ করে, ভালোবেসে নিজেকে হিজাব করুন। আর এই আবরণ যেন সৃষ্টির ও সৃষ্টিকর্তার প্রেমে আবদ্ধ থাকা হয়! আর জোর করে প্রেম হয় না। নারী -পুরুষ সকলের জন্য এ প্রযোজ্য।আবরণ ও আচরণ যেন এমন না হয় সকলে লক্ষ্য করতে বাধ্য হয়!

সীমাবদ্ধতায় মুক্তথাকা : প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটি বিষয় মনে রাখতে হয় সীমাবদ্ধতা পছন্দ করেন সৃষ্টিকর্তাএবং এই আসল পথ! যিনি হিজাব করবেন এমন ভাবে করবেন যে, তা অহংকার প্রকাশ না করে।

আবার কভার না করেও এমন ভাবে থাকা যায় যা অতিরিক্ত নয়, যা অহংকার প্রকাশ করে না।

হিজাব মহিমান্বিতনারী সত্তারসঙ্গে একাত্মতাপ্রকাশের দর্প:

যেহেতু ধরে নিচ্ছি নারীদের ক্ষেত্রে বেশি হিজাবের প্রতি জোর দেওয়া হয় কারণ, নারী সৌন্দর্য একটি চর্চিত বিষয়। মুসলিম মেয়েরা কভার করেন যে বিষয়টা মাথায় রেখে (অবশ্যই পৃথিবীর বেশির ভাগ মুসলিম মেয়ে বিষয়টা না জেনেই হিজাব করেন) তা হলো-

যে জানিয়ে দিচ্ছে সে, সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাসী।

যে জানিয়ে দিচ্ছে সে সভ্যতার প্রতীক।

জানিয়ে দিচ্ছে সে বিশ্বাসী , সে মানবিক ও সাহায্যকারী এবং দানশীল; সুদ-ঘুষ ও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না।

*শায়লা সিমি নূর- লন্ডনপ্রবাসী সুফি কবি ও চিত্রকর।

error: Content is protected !!