অমল বিশ্বাসের কবিতা

Mostafizur Rahman
Mostafizur Rahman

Mostafizur Rahman is a professional content writer at CrawlText, specializing in SEO articles, blog posts, and web copy that drive engagement and conversions. With experience crafting clear, audience-focused content for almost all the niches, he delivers well-researched, optimized pieces on deadline. He combines editorial rigor with keyword strategy to boost traffic, authority, and reader retention across blogs, platforms, and newsletters.

একবার ‘তুমি’ বলে ডাকো

‘তুমি’ শব্দটি মুছে ফেলেছিলাম,
রাতের অদৃশ্য মুখ
কিছুদিন কাঙ্খিত ছিলো কানেকানে
সাবধানে টানতে গিয়ে
কাপড় সরাতে গিয়ে দেখি ক্ষীরধোয়া চাঁদ
মোহনা হারিয়ে ফেলেছে দাঁতের টানে
বহুবিধ দাঁতে।
 
পাগলামির শেষ সীমায় পৌঁছাতে গিয়ে
আমার আঙুল নুড়ির আঘাতে
ঝর্ণাকে ঘোলা করে ফিরে এলো হাতে।
 
তার কব্জির কোণাকার অস্থির লোভ ছেড়ে
দৃষ্টি ফিরে এলো চোখে
তার বুকে জেগে থাকা পাখি দুটো ডাকতে
গাঢ় নীলপাথরের গ্লাসে আচ্ছন্ন হয়ে ভাবলাম
আজকের মতো বেঁচে থাকি,
আগামীকাল যদিও আমার হাতে নেই।
 
‘তুমি’ শব্দটি মুছে দীর্ঘ ঘুম শেষে দেখি
মেঘভরতি বালিশে একজোড়া বেণীর
ছাপ লেগে আছে,
তাড়াহুড়ো না ক’রে মেঝেতে তাকিয়ে দেখি
অনেক্ষণ অপেক্ষা করা পায়ের প্রস্তাব—
আর দাঁড়াতে পারছি না,
অন্তত একবার ‘তুমি’ বলে ডাকো।
 
 
 

অবাধ রচনা

চলো উঠি।
আদুরে রোদ্দুর সন্ধ্যার পথ পার হয়ে
শুরু করেছে রাত্রি রচনা।
 
দহন কাটুক
তোমাকে জমা রাখি পাঁজরের খাঁজে
কেটে যাক ব্যাথা-মুখভার,
পথ চাওয়া শেষে তুমি সেই মেঘ হও
যেখানে ভরাট চোখ।
 
উড়ো হাঁস দেখে আমি ভয় পাই
তার দীর্ঘশ্বাসে হারাবার ভয়,
পড়ন্ত বেলায় সাজি রেখে কী লাভ!
রাত্রিতে বাগানে ফোটেনি ফুল।
 
পৃথিবীর যেখানে
ফুঁ দিয়ে রোদ্দুরের সলতে নেভানো যায়
সেখানে তোমার মতো চিত্রাঙ্গদাকে মানায়,
ভুতুড়ে অন্ধকারে লজ্জার মৃত্যু ঘটলে
বর্ণচ্ছটায় সেজে ওঠে দেহ।
 
যখন শরীরের মন্দ্রিত গান
সুর বেয়ে নেমে আসে চুলের ছটায়,
রাঙা মৃত্তিকায় মিশে যায় অবেলার মেঘ।
 
চলো উঠি।
আধখোলা অন্ধকারে
চাঁদ কামড়ে ধ’রে চেষ্টা ক’রে দেখি
শুরু করা যায় কী-না অবাধ রচনা।
 
 
 

জন্মসংক্রান্ত গল্প

তোমাকে যখন দেখতে যাই
কেউ ভয় পায়, তখন আমি কাঁদতে থাকি
লজ্জিত হই।
 
ভোগ কিংবা উপভোগ বাড়তি চাওয়া হয়ে যায়
তখন কেউ বোবা হতে পারে,
এজন্য বাড়তি ভালোবাসায় অসুখ বাসা বাঁধে।
 
তোমার আঁচলের তলে যখন সে লুকাতে থাকে
কিছু না বলে মাথা নেড়ে চলে আসি,
তোমার দিকে আয়না ধরে
তোমাকে দেখার চেয়ে তাকে মন দিয়ে দেখি।
 
নোটপ্যাডে লিখে আসি, ও হাঁটতে শিখুক
সেদিন আয়না ভেঙে ফেলে
আমি আর তুমি ওর জন্মসংক্রান্ত গল্প লিখবো
এবং আমাদের সম্পর্ক।
 
 
 

বুঝেও বুঝতে চাচ্ছো না

আমার চোখ
বিশাল এক কাঠঠোকরা পাখির মতো
দীর্ঘ বিরহের গল্প হয়ে উঁচু এক শাখায় বসে আছে
অন্ধ করতে পারবে বলে মনে হয় না
পাখি মারতে নেই,
বিচ্ছেদ যে প্রেমের পূর্বশর্ত।
 
ছায়া সরাতে গেলে খুব কাছে আসতে হবে
তখন আমি গান গাবো
প্রেমের নিস্তব্ধতায় নিশ্চিত তুমি সুরের মধ্যে থাকবে,
চোখ থেকে পা অনেক দূরে
জানালার শিকে বাঁধা আকাশে খানিকটা উড়ে
আবার জ্বালাতে আসবো।
 
একটু বুঝতে শেখো
প্রথম থেকে আমি তোমার পাহারায় আছি
পাহারাদারেরাই বেশি দুশ্চিন্তার কারণ,
তুমি আমার প্রতি যতোই রুক্ষমূর্তি ধারণ করো
আমার ছায়া তোমাকে জড়িয়ে ধরে আছে
বুঝেও বুঝতে চাচ্ছো না।
 
 
 

দেয়াল ঘেরা মন

এই দিদি
শোন্,
কখোন-কখোন তুই নির্বোধ মা হোস
একা-একা কথা কোস,
প্রথম বাড়ির কথা মনে পড়ে তোর!
বাতিঘর কিংবা যখন ভোর
উঠোনের পাশে ফুটে থাকা কামিনী ফুল
দেখে তুই গোছাতিস চুল।
 
সর্ষের তেলে একটু লবন দিয়ে
আমার এই দাঁত মেজে দিতি ইনিয়েবিনিয়ে
কাঁদলে মুছিয়ে দিতি চোখ,
বলতিস, ভাই আমার রাঙা ভোর হোক।
 
কিছুটা পাগলি ছিলি
একদিন এই চোখে কালি টেনে দিলি,
আমি মেয়ে নাকি!
আমি তো আমার বাড়িতে থাকি
বলতেই চোখে তোর মেঘের ফোঁটার মতো
নেমে এলো জল কতো
আমার কথায় ছিলো নিশ্চয় দোষ!
কাঁদিসনে দিদি তুই, তুই তো মায়ের মতো হোস।
 
হেসে দিয়ে আদুরে চিমটি দিলি গালে
মনে আছে, সেই শীতকালে
কয়েকবছর পর ভয়ানক এক মাঘ মাসে
অনেক অচেনা লোক এ বাড়িতে আসে,
তোর মুখে ছিলো না তো হাসি
সন্ধ্যায় বলেছিলি ভাই, তোকে খুব ভালোবাসি।
 
তারপর একদিন
কারা যেন বিউগলে বাজালো করুণ বীণ
পরদিন চলে গেলি তুই,
মনে হলো বহুদূর বিদেশ-বিভুই!
 
এতোটাই হিংসুক
ভুলে কি গেছিস তোর ছোট্ট ভাইয়ের মুখ!
আমার খেলনাগুলো কার কাছে রাখি
কার সাথে করি আর রঙ মাখামাখি,
কে গোঁছাবে এলোমেলো সব বইখাতা
তুই বল্, বৃষ্টিতে এ মাথায় ধরবে কে ছাতা।
 
চলে গেলি! বুঝি, চলে যেতে হয়
এ কি জীবনের জয়, নাকি শুধু পরাজয়
নাকি নিয়মেই অনিয়ম শুধু,
যেদিকে তাকাই দেখি মরীচিকা, মরুভূমি ধুধু।
 
পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে ছুটতে ইচ্ছে করে
এই সন্ধ্যায় তোর পরে-পাওয়া ঘরে
কিন্তু কেমন করে যাই তুই বল্,
তোর বিয়ের দিনের মতো নেমেছে যে ঢল।
 
এই দিদি
শোন্,
কখোন-কখোন তুই নির্বোধ দিদি হোস!
ঘুম পাড়াতে গিয়ে এখনও কি কথা কোস
তোর ছোট্ট ভাইয়ের সাথে,
কেঁদেকেঁদে নিরালায় অন্ধকার রাতে!
 
দিদি, কিচ্ছু ভালো লাগে না রে
কেটে যায় তুই ছাড়া এই মন পাথরের ভারে,
ভালো লাগে না রে, কোনো কোলাহল
কখোন আসবি দিদি, তাড়াতাড়ি বল্।
 
 
 

ব্যাকুল মুখের বিশ্বাস 

ভীষণ ঠান্ডা লাগছে,
কই, দ্বিধা ছেড়ে আগে তো উষ্ণ করও
জড়িয়ে ধরো,
তাইবলে চরম ইচ্ছেয় ভেঙেচুরে ফেলতে যেও না
তুষারের কুঁচি সরিয়ে স্বাভাবিকভাবে বিভোর হও।
 
উৎসুক চোখ উৎসবে মাতুক
আঙুলের নরম ডগায় চিত্রশিল্পী হয়ে
ইচ্ছেমতো আমাকে আঁকো।
 
বিলি কেটে চুলের ভেতরে জমা অনুরাগ
তোমার বশবর্তী হলে
অনাবাসিক দেহে প্রেমিক হও,
ঠান্ডার ভোগান্তি কমে গেলে বোকাবোকা হাত
অকস্মাৎ গায়ে তুলে দিয়ে ভাবো
এ একধরণের ঘুমের ঘোর।
 
খোলা খাটে আমার হৃদয় বিছিয়ে পরখ করো
ধরো, জোরে চেপে ধরো!
বরফের তলে আগুন জ্বেলে দিয়ে
উম্মুল মেয়ের বর্তুলবুকে ছুয়ে দাও করতল,
তুমুল ভাসিয়ে দাও শরীরের সব স্তর
উপোষী শুকনো চর ডুবে যাক নদীর ভাপা জলে।
 
আমার ব্যাপারে আরও আগ্রহী হও
বেঘোর বুনোট খুলে দেখে নাও রহস্যের দেহ,
শুভ্রতাকে তছনছ করতে পারও
যদিও আমি পরে আছি ব্লাউজ, পেটিকোট
তবু মানসিকভাবে নগ্ন হয়ে গেছি।
 
আমাদের ফিসফিস শব্দে যেভাবে চুল উড়ছে
মনে হচ্ছে বাসন্তী হাওয়া
গলিরাস্তা, পার্ক কিংবা ভাবতে পারও ঘাসে ঘেরা
উন্মত্ত নদীর পাড়,
আমাদের বিধ্বস্ত শরীর
চলো ছুঁড়ে দিই বিশুদ্ধ নদীর জোয়ারে।
 
এই প্রথমবার আমরা এখানে এসেছি
ব্যাকুল মুখের বিশ্বাসে
লাভ-ক্ষতিকে অব্যহতি দিয়ে যথেষ্ঠ উষ্ণ হয়েছি
নির্ভয়ে স্থির আমাদের চোখ
কাঁচের প্রতিবিম্বে কখনও লজ্জিত হয়নি,
মধ্যরাতের অন্ধকারে নগ্নতা দেখিনি
আকাশপথের মতো শরীর বয়ে গেছে নীল থেকে নীলে।
 
কার্ণিশে থাকা রাতজাগা পাখি
হয়তো দেখেছে আগুন থেকে উৎপন্ন আমোদ,
চাঁদ ও সূর্যের জ্যোতির্বলয়ে ফাটল ধরতে
তোমাকে ছুঁতে গিয়ে দেখি
নিঃসঙ্গতার কালো রক্তে একবিন্দু মুক্তোর উপস্থিতি
চারিদিকে স্বপ্নের ঘোরে ছড়িয়েছিঁটিয়ে থাকা আত্মপ্রত্যয়।
 
গতরাত্রে খুব ঠান্ডায় যতক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম
মনে হচ্ছে কার সাথে অনেক্ষণ ছিলাম,
এখন ভোর পাঁচটা
যাই, সবাই ঘুমিয়ে থাকতে থাকতে
স্নান সেরে আসি।
 
 
 
Mostafizur Rahman
Mostafizur Rahman

Mostafizur Rahman is a professional content writer at CrawlText, specializing in SEO articles, blog posts, and web copy that drive engagement and conversions. With experience crafting clear, audience-focused content for almost all the niches, he delivers well-researched, optimized pieces on deadline. He combines editorial rigor with keyword strategy to boost traffic, authority, and reader retention across blogs, platforms, and newsletters.

Scroll to Top