চার্লস বুকোস্কির দুটি কবিতা- অনুবাদ- টিটো মোস্তাফিজ
উৎপীড়ন
খুব বেশি, খুব কম
খুব মোটা, খুব পাতলা
অথবা কেউনা।
হাসি অথবা কান্না
ঘৃণা, প্রেম
বিদেশীগণ যাদের মুখ
আঙ্গুলের পিছনের মত কুঁচকানো
সৈনিকগণ ছুটছে
রক্তের মহাসড়কে
বেয়োনেট চালাচ্ছে আর বলাৎকার
কুমারীদের।
অথবা, মেরেলিন মনরোর ছবিসহ
সস্তা ঘরে এক বুড়ো লোক।
এই বিশ্বে নিঃসঙ্গতা এতটাই প্রকট
যে তা ঘড়ির কাঁটার ধীর গতির মধ্যে
তুমি দেখতে পারবে।
মানুষ খুব ক্লান্ত
বহুমুখীভাবে
প্রেমসহ কিংবা ছাড়া।
মানুষ একজন আরেকজনকে পছন্দ করে না
প্রত্যেকে প্রত্যেককে।
ধনীরা ধনীদের পছন্দ করে না
গরীবরা গরীবকে পছন্দ করে না
আমরা ভীত।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের বলছে
আমরা সবাই বড় বিজয়ী হতে পারি।
বস্তিজীবন সম্পর্কে
কিংবা আত্মহনন সম্পর্কে
এটা আমাদের বলেনি।
কিংবা এক জনের সন্ত্রাস
একাই একটি স্থানের যন্ত্রণা।
অস্পর্শিত, অনুচ্চারিত
গাছে জল ঢালা।
মানুষ একজন আরেকজনকে পছন্দ করে না
মানুষ একজন আরেকজনকে পছন্দ করে না
মানুষ একজন আরেকজনকে পছন্দ করে না
আমার মনে হয় তারা কখনও তা করবেও না
আমি তা করতেও বলি না।
কিন্তু মাঝেমধ্যে এটা নিয়ে ভাবি।
পুঁতিগুলো দোল খাবে
মেঘেরা জড়ো হবে
এবং খুনিরা শিশুদের মাথা কাটবে
কোণআইসক্রিম থেকে এক কামড় খাওয়ার মত।
খুব বেশি, খুব কম
খুব মোটা, খুব পাতলা
অথবা কেউনা।
প্রেমিকদের চেয়ে হেটার বেশি।
মানুষ একজন আরেকজনের প্রতি ভালো নয়
সম্ভবত , যদি তারা এমন হত
আমাদের মৃত্যুগুলো এত বিষাদের হত না।
ইত্যবসরে আমি তরুণীদের দেখি
কুঁড়ি
সুযোগ পেলে ফুল।
একটা উপায় থাকতেই হবে।
অবশ্যই একটা উপায় থাকতে হবে
যেটা নিয়ে আমরা এখনো ভাবিনি।
আমার মধ্যে এই মগজ কে দিলো?
এটা কাঁদে
এটা দাবী করে
এটা বলে একটা সুযোগ আছে।
এটা ‘না’ বলবে না।
মূল: The Crunch
আর্ট ক্লাসের গরু
ভাল আবহাওয়া ভালো মহিলাদের মত
সাধারণত এটা ঘটে না
আর যখন ঘটে সবসময় টেকে না ।
পুরুষ বেশি স্থিতিশীল
সে যদি মন্দ হয়
তেমনই থাকার সম্ভাবনা বেশি
কিংবা সে যদি ভালো হয়
সে হয়তো তেমনই রয়ে যাবে।
কিন্তু একজন মহিলা অনেকভাবে পাল্টায়
বাচ্চা, বয়স, খাবার, কথোপকথন, যৌনতা
চাঁদ, রোদ থাকা বা না থাকা
কিংবা ভালো সময়।
একজন মহিলাকে সত্ত্বার মধ্যে রাখতে
ভালোবাসা দিয়ে পরিচর্যা করতে হয়,
যেখানে একজন পুরুষ ঘৃণায়ও
আরও শক্তিশালী হতে পারে।
আমি আজ রাতে শুঁড়িখানায় মদ টানছি
আমার সেই গরুগুলোর কথা মনে পড়ছে
একবার আর্টক্লাসে ওগুলো এঁকেছিলাম
এখানকার সবকিছুর চে ভালো দেখাচ্ছিল।
স্প্যাঙ্গলারের বার-এ পান করছি এখন
ভাবছি কাকে ভালোবাসবো কাকে ঘৃণা
কিন্তু নিয়মগুলো কবেই বিদায় নিয়েছে
আমি নিজেকেই ভালোবাসি, ঘৃণাও করি।
তারা আমার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে
টেবিল থেকে পড়ে গড়িয়ে চলে
যাওয়া কমলার মত।
আমাকেই এখন ঠিক করতে হবে
আত্মহনন নাকি আত্মপ্রেমে ডুব দিবো?
কোনটাই বা প্রতারণা?
তথ্যগুলো কোথা থেকে আসছে?
বইগুলো… ভাঙ্গা কাচের মত
ওগুলো দিয়ে তো পাছা মুছবো না।
দেখছ? তবু অন্ধকার গাঢ় হচ্ছে।
(আমরা বোতল টানছি আর আলাপ করছি
এমনভাবে যেন বা বহুদিনের পরিচয়)।
সবচেয়ে বড় বাঁট দেখে গরু কেনো
সবচেয়ে বড় পাছা দেখে গরু কেনো
আর হাত চালাও।
বারটেন্ডার আরেকটি বিয়ার এগিয়ে দেয়
এটা বার-এর মেঝেয় দৌড়াচ্ছে
ও বাবা, অলিম্পিকের একশ মিটার!
আর আমার হাত দুটো সাঁড়াশির মতো
এটাকে থামায়, উপরে তোলে।
ঢিমে প্রলোভনের সোনালী পেশাব
চুমুক দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম।
গরুদের জন্য আবহাওয়া খারাপ
কিন্তু আমার তুলি আঁচড় দিতে প্রস্তুত।
সবুজ ঘাস খড়ের মত চোখ
বিষাদ দেহটার দখল নিয়ে নেয়
বিয়ারটাকে সাবাড় করে দিলাম
আরও একটার অর্ডার দিলাম প্রায় তখনই
সাহস বাড়াতে আর পথ চলা ভালোবাসতে।
মূল: Cows In Art Class
আরো পড়ুন- টিটো মোস্তাফিজের কবিতা